মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার সিক্রেট: ১০টি সেরা প্রমাণিত উপায়!
মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার উপায় সম্পর্কে জানতে চান? চলমান জীবনের চাপ, কাজের
ব্যস্ততা ও সামাজিক প্রতিযোগিতার মাঝে মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখা, মানসিক স্বাস্থ্যের
জন্য একান্ত জরুরী। এটি শুধুমাত্র মনকে শান্ত রাখেনা বরং স্মৃতিশক্তি মনোযোগ ও
সমস্যার সমাধান করার ক্ষমতা বাড়ায়। সেই সাথে আরো জানাবো মস্তিষ্ক ভালো রাখার
খাবার ও মাথা ঠান্ডা রাখার তেলের নাম যা আপনার মস্তিষ্ককে শীতল অনুভূতি দিবে।
ব্রেন দ্বারা মানুষ চাইলেই যে কত কিছু করতে পারে সেটা মানুষ চিন্তাও করতে পারে
না। আর এ কারণে আমরা প্রতিনিয়ত পিছিয়ে পডঅছি নিজেদের সক্ষমতা না জানার কারণে।
তাই জেনে নিন মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির উপায়। সেই সাথে বিপদ এড়াতে
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির খাবার নিয়ে এখনই হয়ে উঠুন সচেতন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার উপায় / মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির উপায়
- মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার উপায় সম্পর্কে জানুন অজানা কিছু তথ্য
- মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার ইসলামিক উপায় সম্পর্কে জেনে নিন
- মস্তিষ্ক ভালো রাখার খাবার
- মাথা ঠান্ডা রাখার ব্যায়াম
- মাথা ঠান্ডা রাখার তেলের নাম
- মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির উপায়
- মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির খাবার
- মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির ব্যায়াম
- মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার উপায় সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন উত্তর
- মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার উপায় সম্পর্কে আমার নিজস্ব অভিমত
মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার উপায়
মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার উপায়। মস্তিষ্ক ঠান্ডা বা শান্ত রাখা মানে হলো মানুষের
চাপ উদ্যোগ এবং উত্তেজনা থেকে নিজেকে দূরে রাখা। অত্যন্ত চাপের মাঝেও মনের
লাগাম ধরে রাখা শিখুন আজকের আর্টিকেল থেকে। একদিকে যেমন সংসারের দায়িত্ব,
অন্যদিকে তেমনি পেশাগত জায়গায় প্রচুর কাজের চাপ। এই দুই মিলিয়েই যেন মনের
উপর পড়ছে নেতিবাচক প্রভাব।
মন শান্ত রাখা তো দূরে থাক মনসংযোগ নষ্ট হয়ে যাওয়ার অভিপ্রায় তাই না? আর এই
সকল সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আজকে জানাবো মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার উপায়
সম্পর্কে। অফিসের কাজ হোক বা যেকোনো কাজ করতে বসেই যেন মেজাজ গিজগিজ করে
হাবিজাবি চিন্তা এসে মাথায় ভর করে। অল্পতেই উদ্বিগ্নতা বাড়ে। মন যেন সারাক্ষণ
অস্থিরতা চঞ্চল হয়ে থাকে।
আপনি কি জানেন অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা মস্তিষ্ককে কুরে কুরে খায়। মস্তিষ্কে অনেক
বেশি নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। প্রবল মানসিক চাপে আপনাকে হয়তো হিমসিম খেতে হয়
তাই আপনি এই সকল টিপসগুলো মেনে চলতে পারেন তাহলে আপনার মস্তিষ্ক অনেক বেশি
ঠান্ডা থাকবে বলে আশা করছি। আপনি হয়তো সম্পর্কের জোর ঝামেলা পছন্দ করেন না
কিন্তু সব সম্পর্ক যে মসৃণ ভাবে যাবে তা কিন্তু নয় মাঝে মাঝে ঝামেলারও
সম্মুখীন হতে হয় তাই না।
তবে সমস্যা হচ্ছে সেটা অতিরিক্ত পর্যায়ে চলে গেলেই বাধে গোলমাল। এবং একটু
খেয়াল করলেই বুঝতে পারবেন যে এর সাথে সাথেই যেন আপনার মানসিক অশান্তিটা বহু
গুণে বেড়ে যায়। আপনি চাইলে কিন্তু এইরকম পরিস্থিতিতে নিজেকে আয়ত্ব রাখতে
পারবেন। কিছু উপায় রয়েছে যেগুলো মেনে চললেই চারপাশের পরিস্থিতির সাথে নিজেকে
মানিয়ে নিতে পারবেন-
- পরিস্থিতি থেকে নিজেকে দূরে রাখুনঃ ঝামেলা তর্ক বিতর্কের পরে সকলের মাঝে কিন্তু আবেগ এবং অনুভূতির একটি উচ্চতর মনোভাব দেখা দেয়। আর এই সময়টাই ভুল বোঝাবুঝির মাত্রা অনেক বেশি হয়। যে পরিস্থিতি হোক না কেন তখন আপনি যদি সেখানেই থাকেন তাহলে আরো অবনতির সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। তাই কিছু মুহূর্তের জন্য সে পরিস্থিতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিন। এজন্য আপনি বাইরে চলে যেতে পারেন অথবা সে পরিস্থিতি এড়িয়ে যান। এছাড়াও কোন কাজ করতে পারেন বা হাঁটতে বেরতে পারেন।
- নিজের পছন্দের কাজ করুনঃ আমরা আমাদের পছন্দের যেকোনো কাজ করতেই অনেক বেশি ভালোবাসি। এই সময় আমাদের মন অল্প হলেও শান্ত থাকে। তাই নিজেকে শান্ত করতে মস্তিষ্ককে ঠান্ডা রাখতে আপনার পছন্দের কাজে নিযুক্ত হন। মন শান্ত রাখা যেমন জরুরী তেমনি এই সকল চিন্তা ভাবনা থেকেও বেরিয়ে আসা দরকার। তাই নিজেকে চাপের মধ্যে রাখবেন না বরং এর থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করুন।
- নিজের উপর চিন্তাভাবনা করুনঃ বেশিরভাগ সময় দেখা যায় যখন তর্ক বিতর্ক চলে তখন আমরা সেই দিকেই অনেক বেশি মনোযোগ দেই। অন্যজন কি বলল, সে আমার সাথে কিরকম আচরণ করল, আঘাত সুলভ কিছু কথা বললে সেটি যেন আমাদের মস্তিষ্কে একেবারে গেঁথে যায়। তাই সবসময় এটিই না করে নিজের আবেগ থেকে বেরিয়ে আসুন এবং নিজের দোষের দিকে আলোকপাত করুন।
- অন্যের সাথে কথা বলুনঃ যদি ঝামেলার মাঝে দোষ-ত্রুটি আপনার হয়ে থাকে তাহলে আপনি অবশ্যই সেটি দ্রুত কথা বলে মিটিয়ে নিন। ক্ষমা মহৎ একটি বড় গুণ, ক্ষমা করুন এবং নিজেও ক্ষমা চান।সৃষ্টিকর্তা কর্মকারীকে প্রচন্ড ভালোবাসেন। আপনার যদি মনে হয় অন্যজন দোষী তাহলে আপনি শান্তভাবে তাকে সেটা বোঝানোর চেষ্টা করুন। কেননা ভুল থেকেই মানুষ শেখে । দ্বিমুখী যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পর্কে আসল মাপকাঠি। তাই শুধুমাত্র সম্ভাবনা রাখলে চলবে না বরং দূরত্ব মিটিয়ে কথা বলুন। না হলে অল্প সময়ের জন্য নিজেকে একা ছেড়ে দিন।
- ঘটনার বাস্তবায়ন করুনঃ আপনার মস্তিষ্ককে ঠান্ডা রাখতে আপনি ঘটনার বাস্তবায়ন করতে পারেন। হ্যাঁ হয়তো বেশিরভাগ আবেগ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সবকিছুই যেন তালগোল পাকিয়ে যায়। কিন্তু এর থেকে শিক্ষা নিয়ে দ্বিতীয় বার সে ভুল থেকে নিজেকে বিরত রাখুন। অন্ততপক্ষে কখন আপনাকে বলতে হবে, এবং কখন আপনাকে থামতে হবে এবং কখন গুরুত্ব দেয়া প্রয়োজন সেই বিষয়গুলো বিবেচনা করা উচিত। নির্দিষ্ট কিছু অভ্যাস ত্যাগ করুন, আবেগকে নিয়ন্ত্রণে রাখুন সাথে আত্মসংযম পর্যবেক্ষণ করা অনিবার্য।
- ইতিবাচক চিন্তা ও কৃতজ্ঞতা চর্চাঃ প্রতিদিন অন্তত তিনটি ইতিবাচক জিনিসের কথা লিখে রাখুন এবং ভাবুন যার জন্য আপনি কৃতজ্ঞ। স্রষ্টাকে স্মরণ করুন এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন।
- গল্পের বইঃ অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাবার জন্য আপনি গল্পের বই পড়তে পারেন এতে করে আপনার মন অন্যদিকে ঘুরবে এবং নেতিবাচক চিন্তা আসবে না। তবে পড়তে বসেও দেখবেন বিভিন্ন রকম চিন্তাভাবনা আপনার মাথার মধ্যে ঘুরছে কিছুতেই পড়াতে মন দিতে পারছেন না। তাহলে আপনি লেখালেখি করতে পারেন।
- পর্যাপ্ত পানি পানঃ মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার উপায় হল পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা। পানি আমাদের শরীরকে হাইডেটেড রাখে। আর শরীর হাইড্রেড না থাকলে মাথায় ভারী ভারী লাগে এবং মনোযোগ কমে আসে। তাই দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।
মনোবিদরা বলেন, পাহাড় প্রমাণ চাপের মধ্যেও মন শান্ত রাখলে সব কাজই সঠিকভাবে
হয়। এজন্য আপনাকে ধৈর্য এবং মনের জোর বাড়াতে হবে। কেননা মনের চাপ যত বাড়তে
থাকবে মস্তিষ্ক ঠান্ডা না থাকলে অবসাদের কারণ হয়ে উঠতে পারে তাহলে উপায় কি
তাই না? এ বিষয় নিয়ে মনোরোগ চিকিৎসকরা বলেছেন, পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন ঘটনা
থেকে শুরু করে পেশাগত ক্ষেত্রে চাপ সামলানোর জন্য মস্তিষ্ককে ঠান্ডা রাখতে সব
থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলেও শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে নজর
দেয়া।
আপনার শারীরিক স্বাস্থ্য যদি ভালো না থাকে তাহলে কোনভাবেই মানসিক স্বাস্থ্য
ভালো থাকবে না। আর এই শরীর ঠিক রাখার জন্য আপনি বিভিন্ন রকমের ব্যায়াম
মেডিটেশন করতে পারেন। আর মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার জন্য মনকে ভালো রাখার জন্য
আপনাকে যথেষ্ট পরিমাণে নিজেকে সময় দিতে হবে। যতটুকু সম্ভব নেট মাধ্যম থেকে
নিজেকে দূরে রাখতে হবে।
তাছাড়া নেতিবাচক সকল বিষয় যেমন নেতিবাচক খবর পড়া, সামাজিক মাধ্যমগুলোতে
সারাদিন অন্যের পোস্ট দেখা এবং তা নিয়ে যদি চর্চা করতে থাকেন তাহলে মনের উপর
চাপ বাড়তে থাকবে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে গত কয়েক দশক ধরে এই মানসিক চাপ
মানুষের মাঝের ইচ্ছা শক্তিকে হ্রাস করেছে। আর মেজাজ নিয়ন্ত্রণে না থাকার ফলে
মানসিকভাবে সুস্থ না থাকাই আত্মহত্যার প্রবণতা বেড়েছে বহু গুনে।
সময়ের সাথে সাথে ব্যস্ততা বাড়বে স্বাভাবিক। অনেক সময় দেখা যায় তীব্র
প্রতিযোগিতার সাথে আমরা নিজেদের খাপ খাওয়াতে পারি না আর এ সকল কিছুর জন্য
অবসাদ যেন আমাদের ঘিরে ধরছে। জীবনকে যদি ঠিকমতো একটু গুছিয়ে নিয়ে নিজেদের
লক্ষ্য স্থির করা যায় তাহলে মানসিক চাপকে অনেক বেশি নিয়ন্ত্রণে আনা
সম্ভব।
এই বিষয় নিয়ে মনোবিদ বিশেষজ্ঞ অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় বলেছেন, মাল্টিটাস্কিং
কোন কাজ আমাদের মনকে শান্ত রাখতে পারেনা। বরং আরো মানসিক চাপকে বাড়িয়ে দেয়।
তাই মাল্টিটাস্কিন করার চেষ্টা করবেন না তা ছেড়ে বরং যেকোনো একটি কাজকেই
লক্ষ্য করে এগিয়ে যান। এতে দেখবেন মানসিক চাপ অনেকটাই কমে আসবে এবং আপনার
মস্তিষ্ক ঠান্ডা থাকবে।
তাছাড়াও প্রতিদিন ঘুম থেকে ওঠার পর মুহূর্তে নিজের জন্য কিছুটা
সময় বরাদ্দ রাখুন মেডিটেশন করুন। কেননা সারাদিনের সকল কাজ অত্যধিক
ব্যস্ততাও নিজেকে পুরোপুরি সামলাতে এর জরি মেলা ভার। মনোবিদ অনিন্দিতা বলেছেন,
কেবলমাত্র যে সকল দায়দায়িত্ব এবং কাজকর্ম থেকেই মানসিক চাপ তৈরি হয় তা
কিন্তু নয়। বরং চারপাশের সম্পর্কগুলি থেকেও প্রচন্ড রকমের অস্থিরতা এবং উদ্বেগ
তৈরি হতে পারে।
ধরুন আপনার সহকর্মী অথবা বসের সাথে কিংবা পরিবারের কোন ঘনিষ্ট মানুষের সাথে
আপনার সম্পর্ক কেমন সে সকল বিষয়ও আপনার মনের উপর প্রভাব ফেলে। তাই যে কোন
সম্পর্কেই যদি কোন সমস্যা তৈরি হয় তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব তা সমাধানের
চেষ্টা করুন। ঈর্ষা জাগলেই সাবধান!!!! ঈর্ষা আমাদের অন্তরকে কলুষিত করে আমাদের
মস্তিষ্কে খারাপ প্রভাব ফেলে আমাদেরকে ধ্বংস করে দেয়।
দুশ্চিন্তা এবং উদ্বেগ এর বড় একটি কারণ। তাই আপনি জীবনে কি পেয়েছেন আর কি
পাননি বরং তা নিয়ে চিন্তা না করে জীবনে কি কি পেয়েছেন তার একটি লিস্ট তৈরি
করুন এবং আর কি কি পেতে চান তা সামনে রেখে এগিয়ে চলুন। আপনাকে যারা বিদ্রুপ
করে তাদের থেকে নিজেকে আলাদা রাখুন এবং সেই সকল মানুষদের উপেক্ষা করতে
শিখুন।
আপনার যদি রাগ পুষে রাখার অভ্যাস থাকে তাহলে তার দ্রুতই ছাড়ার অভ্যাস করতে
হবে। কারোর উপর রাগ করলে মন ক্লান্ত লাগলে কয়েক মিনিট হাতে সময় নিয়ে টান টান
হয়ে বসুন এবং গভীরভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে থাকুন ও ছাড়তে থাকুন। এই
প্রক্রিয়া আপনার মনকে শান্ত করবে মেজাজ নিয়ন্ত্রণে আনবে মানসিক স্বাস্থ্য
ভালো রাখবে। আপনি যদি নিয়মিত করতে পারেন তাহলে আপনার মনের উপর ইতিবাচক প্রভাব
লক্ষ্য করতে পারবেন এবং আপনার মস্তিষ্কও ঠান্ডা থাকবে।
মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার ইসলামিক উপায়
মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার ইসলামিক উপায় সম্পর্কে জানেন কি? ইসলাম আমাদের সব সময় যেকোন পরিস্থিতিতে
শান্ত থাকার নির্দেশ দেয়। মস্তিষ্ক বা মন শান্ত রাখার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ
ও কার্যকর উপায় রয়েছে যা একজন মুমিনের আত্মা ও মনের প্রশান্তি এনে দেয়।
মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার কিছু ইসলামিক উপায় সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক-
- দোয়া ও জিকিরঃ দোয়া ও জিকির করার মাধ্যমে মনের ভিতর অন্যরকম এক প্রশান্তি আসে। মহান রব্বুল আলামীনকে স্মরণ করার মাধ্যমে আমাদের মস্তিষ্ক ঠান্ডা থাকে এবং মানসিক চাপ কমে। নিশ্চয়ই আল্লাহর জিকিরে হৃদয় প্রশান্ত হয় ( সূরা রাদ আয়াত 28 )।
- নামাজ পড়ুনঃ নামাজ পড়া মানেই হচ্ছে মহান রাব্বুল আলামিনের সাথে কথা বলা। মহান সৃষ্টিকর্তার সাথে যদি আপনি কথা বলেন তাহলে শান্তি অনুভব করবেন এটাই স্বাভাবিক। মহান রব্বুল আলামীন সকল মুসলিমদের উপর পাঁচ ওয়াক্ত নামাজকে ফরজ করেছেন। তাই আমরা যদি প্রতিদিন নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি তাহলে সেই নামাজ আমাদের হৃদয়ে প্রশান্তি এনে দেবে।
- পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ মানুষের জীবনের নিয়ম ও স্থিরতা আনয়ন করে। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ুন। নামাজে সেজদায় আল্লাহর সাথে আপনার মনের সকল কথা, চাওয়া পাওয়া প্রকাশ করুন ইনশাআল্লাহ আপনি ইতিবাচক প্রভাব লক্ষ্য করতে পারবেন। আল্লাহ বলেছেন নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীলতা ও মন্দ কাজ থেকে বিরত রাখে। ( সূরা আনকাবুত, আয়াত ৪৫ )।
- কোরআন তেলাওয়াতঃ কুরআন তিলাওয়াত হৃদয়ে প্রশান্তি আনে এটি এমন এক নূর বা আলো যা মনকে হালকা করে এবং চিন্তা প্রশমিত করে। তাই আপনার উচিত প্রতিদিন কিছু সময় নিয়ে কোরআন তেলাওয়াত করা যা আপনার মস্তিষ্ককে ঠান্ডা রাখবে মনকে শান্ত করবে।
- রাগ নিয়ন্ত্রণ করাঃ রাসূল (সা.) বলেছেন, সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যক্তি সে নয় যে কুস্তিতে জয়ী হয় বরং প্রকৃত শক্তিশালী সে যে রাগের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। ( বুখারী ও মুসলিম )।
- ধৈর্য ও বিশ্বাসঃ মহান সৃষ্টিকর্তার উপর ধৈর্য ও বিশ্বাস রেখে আপনি ইবাদত করতে থাকুন দেখবেন আপনার সকল চাওয়া পাওয়া পূরণ হবে। আপনি চাপমুক্ত থাকবেন অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা আপনাকে গ্রাস করবে না। এবং আপনার মস্তিষ্ক ঠান্ডা থাকবে। কোন কষ্ট বা বিপদে পড়লে আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা রেখে দোয়া করতে থাকুন যা আপনার মনে শান্তি এনে দিবে। যে ব্যক্তি আল্লাহর উপর ভরসা রাখে আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট। ( সূরা আত তালাক আয়াত ৩ )।
- দুনিয়ার প্রতি আসক্তি কমানোঃ দুনিয়ার প্রতি অতিরিক্ত আসা ও চাহিদা মানুষকে অস্থির করে তোলে। ইসলামে পরিমিত জীবন যাপন এবং কদরদানি শেখায় যা মন শান্ত রাখে।
এসব উপায় সমূহ নিয়মিত ভাবে চর্চা করলে একজন মুসলিম শুধু মস্তিষ্ক ঠান্ডা
রাখতে পারে না বরং আল্লাহর নৈকট্য লাভ করেও ইহকাল ও পরকালের শান্তি অর্জন করতে
পারে। এছাড়াও মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় নিয়ে বিস্তর আলোচনা করব
মস্তিষ্ক ভালো রাখার খাবার
মস্তিষ্ক ভালো রাখার খাবার এর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মোড সুইং যাকে বলা হয় মেজাজ পরিবর্তন। এই ভালো তো
আবার এই মুহূর্তেই খারাপ। আর এই মোড সুইং এর সবথেকে বেশি শিকার হয়ে থাকেন
নারীরা। হঠাৎ করে রেগে যাবার পর অনেকেই এই রাগ সহজে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে
পারেন না। অনেকে আবার এ সময় অধিক পরিমাণ খাবার খাওয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা
যায়।
আবার অনেকেই এই সময়টাই এমন সব খাবার খেয়ে থাকে যা আমাদের শরীরের জন্য
ক্ষতিকর। তাই আজকে এমন কিছু মস্তিষ্ক ভালো রাখার খাবার নিয়ে আলোচনা করব যা
আপনাদের মেজাজ সহজে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে অনেক বেশি সাহায্য করবে। মস্তিষ্ক
ঠান্ডা বা শান্ত রাখতে কিছু নির্দিষ্ট খাবার বিশেষভাবে সহায়ক।
এই খাবার গুলো মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্র কে শান্ত করে, মানসিক চাপ কমায় এবং
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কে বাড়াতে সাহায্য করে। মানুষ হিসেবে আমাদের
মস্তিষ্ককে ঠান্ডা রাখা অত্যন্ত জরুরী। মস্তিষ্ক ঠান্ডা থাকলে আমাদের মন ও শরীর
দুটোই ভালো থাকে। মাথা ঠান্ডা রাখার ব্যায়াম সম্পর্কে আলোচনা করার আগে চলুন তাহলে মস্তিষ্ক ভালো রাখার খাবার সম্পর্কে জেনে নেই-
- জিংক সমৃদ্ধ খাবারঃ স্নায়ুতন্ত্রের জন্য জিংক জাতীয় খাবার অনেক বেশি উপকারী। আর এই সকল খাবার খাওয়ার ফলে মস্তিষ্ক অনেক বেশি ঠান্ডা থাকে।
- ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ খাবারঃ ম্যাগনেসিয়াম মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপ গুলোকে শান্ত রাখতে অধিক কার্যকরী। এ সকল খাবার গ্রহণ করার ফলে আমাদের উদ্বিগ্ন তাও অনেকাংশে কমে আসে।
- ওমেগা থ্রি জাতীয় খাবারঃ যে সকল খাবারে ওমেগা-৩ রয়েছে সে সকল খাবার খাওয়ার ফলে আমাদের মস্তিষ্কের উদগ্নতা বাড়ে না বরং নিয়ন্ত্রণে থাকে। ফলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ও বৃদ্ধি পায়। ওমেগা থ্রি জাতীয় খাবার মস্তিষ্ককে সতেজ করে।
- চাঃ মস্তিষ্ক ভালো রাখার খাবার এর মধ্যে অন্যতম একটি হলো চা। চা পছন্দ করে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। চা মানেই প্রশান্তি। চা আমাদের মনকে শান্ত করে। রং চা, গ্রিন টি স্নায়ু প্রশান্ত করতে সহায়তা করে। তবে অতিরিক্ত ক্যাফেইন এড়িয়ে চলা উচিত।
- হলুদঃ হলুদের মধ্যে যে সকল উপাদান রয়েছে তা আমাদের রাগ এবং হতাশাকে দূর করে দেয়। হলুদ খাওয়ার ফলে আমাদের শরীরে যে সুখী হরমোন গুলো আছে সেগুলো জাগ্রত হয় এবং আমাদের মন শান্ত থাকে।
- চকলেটঃ চায়ের মতোই চকলেটও আমাদের অনেক বেশি পছন্দ। এই চকলেটের ৭০ শতাংশ উচ্চ কোকো ফ্ল্যাভোনয়েড আছে। যা আমাদের মস্তিষ্ক এবং হার্টে রক্ত প্রবাহে সাহায্য করে এবং আমাদের উদ্বিগ্নতা হ্রাস পায়। তবে পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।
- খেজুরঃ খেজুর উচ্চ পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি খাদ্য। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে অধিক পরিমাণে উৎপাদিত হয় এই খেজুর। খেজুরের অধিক মাত্রায় ভিটামিন ও খনিজ লবণ আছে যা আমাদের মস্তিষ্ককে ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করে।
- মধুঃ মস্তিষ্ক ভালো রাখার খাবারের মধ্যে অন্যতম আরেকটি হলো মধু। মধুতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আমাদের মস্তিষ্কের কোষগুলোকে রক্ষণাবেক্ষণ করে। যা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কে বাড়িয়ে তুলতে সক্ষম।
- আখরোটঃ বাদামের মধ্যে আখরোট অন্যতম পুষ্টি সমৃদ্ধ একটি খাবার। এই আখরোট বাদাম আমাদের মস্তিষ্ককে ঠান্ডা রাখতে এবং মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কে বাড়িয়ে তুলতে অনেক বেশি সাহায্য করে।
- ফলমূলঃ আমাদের মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার উপায় এর জন্য বিভিন্ন রকমের ফলমূল গ্রহণ করা উচিত। বেশি পরিমাণে শর্করা খাবার খান এবং শস্য দানা এড়িয়ে চলুন। আমিষ জাতীয় খাবার খেতে পারেন তবে এমন ভাবে বেছে নিন যাতে ক্যালরি ও চর্বির পরিমাণ কম থাকে। এছাড়াও খাবারের পরিমাণে লবণের ব্যবহার সীমিত করুন। পাতে বাড়তে লবণ খাবেন না।
- হালকা ও পরিমিত খাবারঃ অতিরিক্ত ভারি বা মসলাযুক্ত খাবার মস্তিষ্কে অস্বস্তি আনতে পারে। তাই পরিমিত ও সহজপাচ্য খাবার খাওয়া মস্তিষ্ককে আরাম দেয়।
এই খাবারগুলো যদি নিয়মিত খাদ্যাভ্যাসে রাখা যায় তবে মস্তিষ্কে প্রশান্তি
বজায় রাখা অনেক সহজ হবে। মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার উপায় এর মধ্যে মস্তিষ্ক
ভালো রাখার খাবার অন্যতম আশা করছি এ সম্পর্কে বিস্তর ধারণা পেয়েছেন।
মাথা ঠান্ডা রাখার ব্যায়াম
মাথা ঠান্ডা রাখার ব্যায়াম। মস্তিষ্ককে ঠান্ডা রাখতে অথবা সুস্থ রাখতে আমরা
আলাদাভাবে তেমন কিছু করি না বললেই চলে। কিন্তু সর্বোপরি আমাদেরকে সুস্থ থাকতে
হলে মস্তিষ্ককে রাখতে হবে সজল। তাই মস্তিষ্কের ব্যায়ামের প্রয়োজন আছে। মনোযোগ
বাড়ানোর জন্য ও মনকে স্থির করতে, ফোকাস ধরে রাখতে ব্যায়াম অত্যন্ত
জরুরী। মাথা ঠান্ডা রাখার তেলের নাম আলোচনা করব তার আগে চলুন জেনে নেয়া
যাক মাথা ঠান্ডা রাখার ব্যায়াম সম্পর্কে বিস্তারিত-
আমাদের জীবনটাই যেন অস্থিরতায় ভরপুর। চারপাশে এত অস্থিরতা যে নিজেকে স্থিতিশীল
রাখা খুবই মুশকিল। তাই মাথা ঠান্ডা রাখার ব্যায়াম করার অভ্যাস করুন। বয়সের
সাথে সাথে স্মৃতিশক্তি কমতে থাকবে তা স্বাভাবিক কিন্তু এই স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি
করতে মস্তিষ্কের ব্যায়াম অত্যন্ত কার্যকরী। পাশাপাশি শরীরচর্চা ও জরুরী।
গবেষণায় দেখা যায়, নিয়মিত কেউ যদি শরীর চর্চা করে তাহলে আলযেইমার অর্থাৎ
স্মৃতিশক্তি ক্ষয়ে যাওয়ার প্রবণতা কমে।
নিয়মিত ব্যায়াম করলে মানসিক চাপ কমে, দুশ্চিন্তা দূর হয়। মাথা ঠান্ডা রাখার
ব্যায়াম করতে আপনি প্রতিদিন বিজ্ঞান ও গণিত চর্চা করতে পারেন এতে করে আপনার
সৃজনশীল কাজ করার ক্ষমতা বাড়বে যা মস্তিষ্কে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এছাড়াও
আপনি ছবি আঁকা, লেখালেখি, ডাইরি লেখা, ছবি তোলা, যেকোনো ছন্দ মিলানো এর সকল
কিছুই করতে পারেন, যা আপনার মস্তিষ্ককে সক্রিয় করবে।
খেলার
ছলেও কিন্তু ব্যায়াম করা যায় জানেন কি? যেমন রুবিকস কিউব, পাজল মেলানোর মতো
বিভিন্ন খেলায় রোজ কিছুটা সময় কাটাতে পারেন। শব্দ সংখ্যা গণিত কিংবা নানা
ধরনের আকৃতির খেলা অনলাইনে কিংবা অফলাইনে খেলতে পারেন। তবে অনলাইনে গেম খেলতে
শুরু করে শরীরের যেন জড়তা না আসে সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরী।
নতুন নতুন দক্ষতা তৈরি করুন এইজন্য সেলাই করতে পারেন। এছাড়াও সৃজনশীল উপায়ে
বিভিন্ন ঘর সাজানোর জিনিস তৈরি করে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে পারেন। ফেলনা জিনিসকে
কাজে লাগিয়ে ঘর সাজানোর জিনিস তৈরি করতে পারেন। শরীরচর্চা মানে যে শুধুমাত্র
পার্কে গিয়ে আপনাকে দৌড়াতে হবে তা কিন্তু নয় বরং আপনি আপনার বারান্দা কিংবা
ঘরের যে কোন লম্বা জায়গায় অথবা করিডোরে হাটাহাটি ও করতে পারেন।
শুয়ে থেকেও কিছু ব্যায়াম করতে পারেন অথবা এক জায়গায় দাঁড়িয়ে করা সম্ভব
এরকম ব্যায়ামও করতে পারেন। আপনার পোশা প্রাণীদের সাথে খেলাধুলা করুন শরীর মন
দুটোই ভালো থাকবে এবং মস্তিষ্ক ঠান্ডা থাকবে। আশা করছি নিশ্চয়ই বুঝতে
পেরেছেন মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার উপায় মস্তিষ্ক ভালো রাখার খাবার এবং মাথা
ঠান্ডা রাখার ব্যায়াম সম্পর্কে।
মাথা ঠান্ডা রাখার তেলের নাম
মাথা ঠান্ডা রাখার তেলের নাম আপনার জানা আছে? আপনি হয়তো এমন কোন তেল চান যা আপনার চুলের
স্বাস্থ্য ভালো রাখার পাশাপাশি আপনার মাথা কেউ ঠান্ডা রাখবে তাইনা? আমাদের
অনেকের মাঝেই অল্পতেই মাথা গরম হয়ে যাওয়ার সমস্যা রয়েছে। আর এখন যেহেতু
গরমের সময় সেহেতু মাথা গরম হওয়ার ফলে আমাদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা
দিবে।
আর এই সকল সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমরা মাথা ঠান্ডা রাখার তেল ব্যবহার
করি। আবার অনেকেই হয়তো জানে না কোন তেলটা ব্যবহার করলে অল্প সময়ের মধ্যে মাথা
ঠান্ডা হবে। বাজারে বিভিন্ন ধরনের তেল পাওয়া যায় যেগুলো ব্যবহার করার ফলে
মাথা শীতল থাকে। তবে উল্টাপাল্টা তেল দেওয়ার ফলে আপনার চুল ঝরে পড়বে এবং
মাথার ত্বকের বিভিন্ন রকম সমস্যায় ভুগবেন।
মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার জন্য কিছু প্রাকৃতিক তেল বহু যুগ ধরে ব্যবহার হয়ে আসছে।
এই তেলগুলো স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত করতে সাহায্য করে। তাই আপনারা যারা তেল
ব্যবহার করতে ভয় পান তাদেরকে জানাবো মাথা ঠান্ডা রাখার তেলের নাম সম্পর্কে যা
আপনি অল্প সময়ের মধ্যেই আপনার মাথার ত্বক ঠান্ডা করে ফেলতে
পারেন। মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার উপায় ইতিমধ্যে জেনেছেন। নিচে কয়েকটি মাথা
ঠান্ডা রাখার তেলের নাম দেয়া হলো-
- নবরত্ন তেল
- ল্যাভেন্ডার তেল
- পিপারমেন্ট তেল
- জেসমিন তেল
- প্যারাসু ট তেল
- বাদাম তেল
- অলিভ অয়েল
- পুদিনা পাতার তেল
এই তেল গুলো শুধুমাত্র মালিশের মাধ্যমে ব্যবহারে তাৎক্ষণিক মানসিক প্রশান্তি
এনে দিতে পারে। এই সকল তেল সমূহ আপনার মাথাকে শিথিল করবে, মাথার রক্ত সঞ্চালনকে
ত্বরান্বিত করে পাশাপাশি চুলের বৃদ্ধিতেও খুবই ভালো। এই তেল ব্যবহার এর মাধ্যমে
মাথার ত্বকে শীতল অনুভব করবেন। চুলের পাশাপাশি আপনার স্নায়ু কেউ শান্ত করতে
সাহায্য করবে।
এজন্য আপনি কিছু কিছু তেল বাড়িতেও বানাতে পারেন এই সকল উপাদান দিয়ে। হাতের
উপর পরিমাণ মতো তেল নিয়ে মাথার ত্বকে বেশ খানিক সময় নিয়ে মেসেজ করতে থাকুন।
এতে করে আপনার ত্বকের রক্ত সঞ্চালন বাড়বে, ব্যাথা থেকে মুক্তি দিবে চুলে শক্তি
সরবরাহ করবে। ফলস্বরূপ আপনি ঠান্ডা এবং আরামদায়ক অনুভব করার পাশাপাশি চুলকে
স্বাস্থ্য উজ্জ্বল করে তুলতে পারবেন। তবে দীর্ঘ মেয়াদে ভালো ফল পেতে এগুলোর
সঙ্গে স্বাস্থ্যকর জীবন যাপন ও জরুরী।
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির উপায়
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির উপায়। আপনি কি কখনো এমন পরিস্থিতিতে পড়েছেন
যখন আপনি কারো নাম্বার অথবা কোন একটা জায়গার কথা মনে করার চেষ্টা করছেন কিন্তু
কোনভাবেই তা মনে করতে পারছেন না? অনেকে বলে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের
স্মৃতিশক্তি ও নাকি লোপ পায়। এমনকি কোন কিছুতে যুক্তি দেবার সক্ষমতা ও
কমে আসে। তবে আশ্বাসের কথা হচ্ছে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কে ফিরিয়ে আনা
সম্ভব।
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে কাজের চাপ প্রচুর। আর এই কাজের চাপে আপনি হয়তো প্রায়ই
অনেক কিছু ভুলে যাচ্ছে আপনার স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে পড়ছে? মস্তিষ্কের
কার্যক্ষমতা কমে যাওয়া হেলাফেলা করার বিষয় নয়। ধীরে ধীরে এর পরিণাম
ভয়ংকর হতে পারে। তাই বিভিন্ন গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী মস্তিষ্কের
কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় সম্পর্কে জেনে নিন-
- পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমঃ রাতে যদি ঘুম না হয় তাহলে আপনার বার্ধক্য প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে মস্তিষ্ক বাধা দিবে। এ সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম অত্যন্ত জরুরী। ঘুম যদি পর্যাপ্ত পরিমাণে না হয় তাহলে মস্তিষ্ক প্রায় সাত বছরের বেশি বুড়িয়ে যেতে পারে। মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কে বৃদ্ধি করতে ঘুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।
- ঘুমোনোর আগে কার্যক্রমঃ মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় অন্যতম একটি হচ্ছে ঘুমোনোর আগে যে কোন কার্যক্রম করা। আপনার কি কখনো এমন হয়েছে যে আপনি একটি পড়া কিছুতেই মুখস্ত করতে পারছেন না বা মনে রাখতে পারছেন না। তাহলে আপনি ঘুমোনোর আগে সেই পরোটা মুখস্ত করে নিন দেখবেন পরের দিন সকালে সেটি ভালোভাবে মনে করতে পারবেন। তাই আপনি যদি কোন পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নেন, ঘুমোতে যাওয়ার আগ মুহূর্তে প্রশ্নের উত্তরগুলো মাথার মধ্যে একবার ঝালিয়ে নিন।
- আর আপনার সাথে যদি খারাপ কিছু ঘটে অথবা কোন বেদনাদায়ক ঘটনার স্বীকার হন তাহলে ঘুমোতে যাওয়ার আগে সেটি মনে করা থেকে বিরত থাকুন। কেননা ঘুমোতে যাওয়ার আগে আপনি যাই মনে করবেন সেটি আপনার স্মৃতিশক্তিকে শক্তিশালী করবে এবং সেটা যদি খারাপ কিছু হয় তাহলে আপনার নেতিবাচক আবেগকে বাড়িয়ে তুলবে।
- এই কারণে আপনি যখন ঘুমাতে যাবেন তখন ভয়ঙ্কর কোন মুভি বা গল্প শোনা থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকবেন। এর পরিবর্তে আপনি সারাদিনে যে সকল ভাল কাজ করেছেন বা অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন সেগুলো মনে করার চেষ্টা করুন। যাতে আপনার মস্তিষ্ক এই ইতিবাচক প্রভাবটাকে স্মৃতিতে আটকে রাখে।
- সঠিক সময়ে ঘুম থেকে ওঠাঃ ঘুম যেমন আমাদের স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তেমনি আপনি কখন ঘুম থেকে উঠছেন সেটিও অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। আপনার সারা দিন কিভাবে যাবে তা অনেকাংশে নির্ভর করছে আপনি কখন এবং কিভাবে ঘুম থেকে উঠছেন তার উপরে। এক্ষেত্রে সম্পূর্ণ অন্ধকার ঘরে ঘুমানো উচিত। এবং তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠা উচিত।
- ভরে সূর্যের আলো আমাদের শরীরের জন্য খুবই ভালো। সূর্যের আলো আমাদের চোখের পাতার মধ্য দিয়ে মস্তিষ্কে যায় এবং আমাদের মস্তিষ্ককে জেগে ওঠার জন্য প্রস্তুত করে। তখন করটিসল নামক এক ধরনের হরমোন পর্যাপ্ত পরিমাণে নিঃসরণ ঘটে। আর এই হরমোনের মাত্রায় ঠিক করে আপনার মস্তিষ্ক সারাদিনে কতটা কার্যক্ষম থাকবে। এইজন্য সকালে ঘুম থেকে উঠুন এবং সুস্থ থাকুন।
- ঠান্ডা ঘরঃ গরমের থেকে তুলনামূলকভাবে ঠান্ডা পরিবেশে স্মৃতিশক্তি এবং মনোযোগ অত্যন্ত তিন গুণ বেশি থাকে। তাছাড়া ঠান্ডা ঘর মাথা ঠান্ডা রাখে। তাই আপনার ঘরের তাপমাত্রা কি সব সময় কমিয়ে রাখুন কখনো ২০ ডিগ্রী সেলসিয়াস এর বেশি রাখবেন না।
- গল্প শেষ থেকে শুরু করুনঃ গল্প পড়ার অভ্যাস করতে পারেন। পড়া শেষ করে সেই গল্পটি মনে রাখার চেষ্টা করুন। এবার শুরু থেকে না করে শেষ বা পেছন থেকে গল্পটা মনে করার চেষ্টা করুন। এই পন্থাটি আপনার মস্তিষ্কের কোষগুলোকে সচল করার পাশাপাশি শক্তিশালী করতে অত্যন্ত কার্যকরী হবে।
- হাটাহাটিঃ মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় অন্যতম একটি হলো নিয়মিত হাটাহাটি করা। হাটাহাটি করার মাধ্যমে আপনার মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির ব্যায়াম ও হয়ে যাবে। আপনি যদি প্রতিদিন হাঁটাচলা করেন অথবা জগিং করেন তাহলে তা আপনার শরীরকে ভালো রাখার সাথে সাথে ব্রেন কেউ সুস্থ রাখবে। সপ্তাহে অন্তত দুই থেকে তিন দিন ২০ মিনিট করে হাঁটাহাঁটি করার চেষ্টা করুন এছাড়া জগিং করতে পারেন।
- পায়ের আঙ্গুল ম্যাসাজঃ আপনি যখন অবসর সময় বসে থাকেন তখন পাঁচ মিনিট পায়ের আঙ্গুল ম্যাসাজ করুন। এভাবে প্রতিদিন করবেন। আঙ্গুলের উপর থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে টিপতে টিপতে নিচের দিকে যাবেন। এই ম্যাসাজ মস্তিষ্কে খুশির সাথে যোগাযোগ স্থাপনে সাহায্য করবে কার্যকারিতা বাড়াবে।
- বিরতি নিনঃ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রচুর চাপ থাকে। প্রতিদিনের নানা ধরনের ব্যস্ততায় আমরা হয়তো অনেক বেশি চাপ বা স্ট্রেসে থাকি। প্রতিনিয়ত অনেক ব্যস্ততার কারণে এই চাপের মধ্যে থাকা খুবই স্বাভাবিক একটা বিষয়। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা অতিমাত্রায় অস্বস্তিকর চাপ দুশ্চিন্তা উদ্যোগ আমাদের মস্তিষ্কের নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
- এই জন্যই আমাদের চাপমুক্ত থাকা অনেক বেশি প্রয়োজন। কাজের মাঝে মাঝে বিরতি নিন মস্তিষ্ককে বিশ্রাম দিন। আমাদের মস্তিষ্কে একটি নিউরাল নেটওয়ার্ক রয়েছে যার কাজ হল মানুষকে কল্পনা করার ক্ষমতা অথবা স্বপ্ন দেখার সক্ষমতা দেয়। আপনি যখন সবকিছু থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবেন এবং বিরতি নিবেন তখন আপনার মস্তিষ্কে এই অংশ সক্রিয় হবে এবং আরো ভালোভাবে কাজ করার সুযোগ করে দিবে।
- হ্যাঁ, হয়তো সবকিছু থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়াটা অনেক কঠিন। তবুও আপনার মস্তিষ্ককে ঠান্ডা রাখার উপায় এবং মস্তিষ্ককে শান্ত করার জন্য ধ্যান করার মতো কিছু পদ্ধতির অনুসরণ করতে পারেন। কেননা ধ্যান চাপ বা স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা কে নিয়ন্ত্রণে রাখতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
- নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করুনঃ মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় হচ্ছে নিত্যনতুন চ্যালেঞ্জ নিন। যেমন নতুন কিছু শিখুন এক্ষেত্রে আপনি বই পড়ার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন অথবা নতুন কোন ভাষা শেখার চেষ্টা করতে পারেন। যা আপনার মস্তিষ্কে স্থিতিস্থাপকতাকে বাড়িয়ে তুলবে। তা ছাড়াও আপনি আপনার পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে পারেন এটি খুবই একটি ভালো অভ্যাস।
- এমনকি আপনার বন্ধুদের সাথে নিয়ে কোন অনলাইন গেম খেলতে পারেন। এটা আপনার জন্য শুধুমাত্র কেবল একটি চ্যালেঞ্জি হবে না অন্যদের সাথে প্রতিযোগিতা করার মন মানসিকতা তৈরি হবে। এভাবে আপনার মস্তিষ্কের মিথস্ক্রিয়া বাড়বে। আর এই সামাজিক মিথস্ক্রিয় মাধ্যমে নিত্য নতুন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ এবং সেগুলো মোকাবেলা করার সক্ষমতা আপনার মস্তিষ্কের কার্যকারিতা কে বাড়িয়ে তুলবে।
- চলার পথে মুখস্ত করাঃ মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির উপায় অন্যতম একটি হলো চলার পথে কোন কিছু মুখস্ত করার অভ্যাস। বিভিন্ন গবেষণা থেকে প্রমাণিত যে আপনি যদি চলতি পথে নতুন কোন শব্দ অথবা নতুন কিছু শেখার চেষ্টা চালান তাহলে সেটি মনে রাখার প্রবণতা বেশি থাকে। তাই ভবিষ্যতে কোন প্রেজেন্টেশন বা কোন বক্তব্য অথবা কোন কাজের জন্য আপনি হাঁটতে হাঁটতে সেটি পড়ার অভ্যাস করে দেখতে পারেন।
- প্রতিদিনের অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসুনঃ মস্তিষ্ক যেন নির্জীব হয়ে না পড়ে সেজন্য ব্রেনকে সবসময় নতুন কিছু শিখতে উৎসাহিত করতে হবে। তাই প্রতিদিনের অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসুন রুটিন ভেঙ্গে নতুন নতুন কাজ করার চেষ্টা করুন।
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির খাবার
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির খাবার আমাদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে অধিক কার্যকরী। ইতিমধ্যে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা
বৃদ্ধির উপায় নিয়ে আলোচনা করেছি। আজকের কার্যক্ষমতার বৃদ্ধির অন্যতম আরেকটি
উপায় হচ্ছে সুষম খাবার গ্রহণ করা। মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির ব্যায়াম
যেমন আমাদের মস্তিষ্কের জন্য প্রয়োজনীয় তেমনি মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির
খাবার ও অতিবো গুরুত্বপূর্ণ।
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করতে খাবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন
করে।
আখরোটের
পলিফেনলস ব্রেনের স্মৃতিশক্তিকে বৃদ্ধি করে। এছাড়াও সামুদ্রিক মাছের মধ্যে
ওমেগা থ্রি ফ্যাটি এসিড, পালং শাক, চকলেট, গ্রিন টি, অলিভ অয়েল বিভিন্ন রকমের
শাকসবজি ইত্যাদি মস্তিষ্কের স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য অত্যন্ত জরুরী।
আমরা যে পরিমাণ গ্লুকোজ এবং শক্তি গ্রহণ করে থাকি তার ২০ শতাংশ সরাসরি আমাদের
মস্তিষ্কে যায়। আর এ কারণেই মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা অনেকাংশে আমাদের দেহের
গ্লুকোজের পরিমাণের ওপর নির্ভর করে। তাই দেহের গ্লুকোজের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে
যদি না থাকে তাহলে মন মস্তিষ্ক কোনটাই ভালো থাকবে না কুয়াশাচ্ছন্ন হয়ে
যাবে।
আপনি হয়তো কোন খাবার খেতে অনেক বেশি পছন্দ করেন তাই যে খাবারটি আপনার পছন্দ
সেটি খাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। কেননা আমাদের পছন্দকৃত খাবার আমরা যখন গ্রহণ
করি তখন আমাদের মস্তিষ্কে ডোপামিন নামে এক ধরনের রাসায়নিক নির্গত হয়। আর এই
কারণেই আমরা আমাদের পছন্দকৃত খাবার কি খাওয়ার সময় বা আমাদের কোন পছন্দকৃত
কাজটি করার সময় অনেক বেশি শান্তি অনুভব করি।
তবে শুধুমাত্র মস্তিষ্কের ক্ষুধা মেটালে চলবে না পেটের ক্ষুধা মেটানোও দরকার।
মানবদেহের পরিপাকতন্ত্রের ১০০ ট্রিলিয়ন অনুজীব রয়েছে। এরা স্নায়ু
ব্যবস্থার মাধ্যমে সাধারণত মস্তিষ্কের সাথে যুক্ত থাকে। আর এই মস্তিষ্ককে ভালো
রাখার জন্য এসব অনুজিব সমূহের একটা ভারসাম্য রাখা প্রয়োজন। পেটকে বলা হয়ে
থাকে দ্বিতীয় মস্তিষ্ক।
স্বাস্থ্যকর এবং বৈচিত্র্যপূর্ণ খাদ্য এসব অনুজীব সমূহের মাত্রা কে ঠিক রাখে
এবং মস্তিষ্ককে সুস্থ স্বাভাবিক রাখতে অনেক বেশি সাহায্য করে। চর্বি দিয়ে গঠিত
হয় মস্তিষ্কের বিভিন্ন কোষ তাই আমাদের খাদ্য তালিকা থেকে চর্বি একেবারেই বাদ
দেওয়া সঠিক নয়। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের বাদাম, মাছ, বীজ জাতীয় খাবার,
রোজমেরি, হলুদ, এভোকাডো থেকে ফ্যাটি এসিড পাওয়া যায় আর এই ফ্যাটি অ্যাসেট
মস্তিষ্কের জন্য খুবই উপকারী।
তবে একা একা না খেয়ে অন্যদের সাথে মিলেমিশে ভাগাভাগি করে খাওয়ার চেষ্টা করুন।
কেননা সামাজিকীকরণ আমাদের মস্তিষ্কে স্বাস্থ্যকর খাবারের সকল সুফলকে বাড়িয়ে
দেয়। আশা করছি নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির
উপায় এবং মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির খাবার সম্পর্কে।
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির ব্যায়াম
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির ব্যায়াম সম্পর্কে আপনার জানা আছে? মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য
আবার ব্যায়াম? কি আশ্চর্য হচ্ছেন তাই না? ঠিকই শুনেছেন। ব্যায়াম বা
শরীরচর্চার মাধ্যমে আমাদের মস্তিষ্কের উন্নতি ঘটায়। ব্যায়াম বা শরীর চর্চা
করার ফলে মস্তিষ্কের সাইন্যাপসিস বা যে অংশের দুইটি কোষের নিউরনের মাঝে
স্নায়বিক বৈদ্যুতিক স্পন্দন আদান-প্রদান ঘটে আবার বেড়ে যায়।
ফলে মস্তিষ্কের মধ্যে সঠিকভাবে যোগাযোগ স্থাপিত হয় এবং অতিরিক্ত কোষ গঠনে
সাহায্য করে। মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির খাবার গ্রহণ করার পাশাপাশি
আমাদের মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির ব্যায়ামও অধিক কার্যকরী। ব্যায়াম বা
শরীর চর্চা করার মাধ্যমে হৃদযন্ত্র অনেক বেশি সুস্থ থাকে। আর হৃদ যন্ত্র সুস্থ
থাকলে আমাদের শরীরে অক্সিজেন সরবরাহ ভালো হয়। এতে আপনি বেশি করে অক্সিজেন
গ্রহণ করতে পারবেন এবং শরীর থেকে সকল বিষাক্ত পদার্থ বের করে দিতে
পারবেন।
এই জন্য আপনি যদি বাসার বাইরে অথবা কোন খোলা জায়গায় শরীরচর্চা করতে পারেন
তাহলে বেশি ভালো হবে। কেননা এর ফলে আপনার শরীরে ভিটামিন ডি শোষণ ক্ষমতা বাড়বে।
এছাড়াও ব্যায়াম করতে করতে আপনি নতুন কোন পরিবেশ ঘুরে দেখতে পারেন। এতে করে
আপনার অন্য মানুষদের সাথে মতামতের আদান-প্রদান হবে এবং আপনার যোগাযোগ
সক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে।
এছাড়াও তাদের কাছ থেকে আপনি হয়তো নতুন কিছু শেখার সুযোগও পাবেন। এই সকল
ক্রিয়া-কলাপ গুলো আপনার মস্তিষ্ককে সক্রিয় করে তুলবে। ভালো সময় কাটান এতে
করে আপনার মস্তিষ্ক ও ভালো থাকবে। কোন কিছু শেখার ইচ্ছা, কারো সাথে ভাগাভাগি
করার মন মানসিকতা আপনার মস্তিষ্কে সামাজিক মিথস্ক্রিয়া এবং ব্যায়ামের
উপকারিতাকে বাড়িয়ে দিবে।
অভ্যস্ত হাত বাদে অন্য হাতে লিখুন বা ব্রাশ করুন এতে মস্তিষ্কের উভয়
হেমিস্ফিয়াকে সক্রিয় করে এবং নিউরেনাল সংযোগ বৃদ্ধি করে। এছাড়াও
ভিজুয়ালাইজেশনের ব্যায়াম করতে পারেন যেমন চোখ বন্ধ করে একটি ছবি বা পরিস্থিতি
কল্পনা করুন। এতে আপনার কল্পনাশক্তি ও স্মরণ শক্তি উন্নত হবে। এ সকল ব্যায়াম
সহজ হলেও নিয়মিত ভাবে চর্চা করলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা দীর্ঘমেয়াদী অনেক
বৃদ্ধি পাবে।
মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার উপায় সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্নঃ মস্তিষ্কে গ্যাস সৃষ্টির কারণ কি?
উত্তরঃ মস্তিষ্কে গ্যাসের অনুভূতি আসলে পেটের গ্যাস জনিত চাপ বা এসিডিটির ফলে
হয়। যা স্নায়ুর মাধ্যমে মাথা ভারী, মাথাব্যথা, বাজে অনুভূতির সৃষ্টি করতে
পারে।
প্রশ্নঃ মস্তিষ্কের জ্বালানি কোনটি?
উত্তরঃ মস্তিষ্কের প্রধান জ্বালানি হল গ্লুকোজ যা আমরা কার্বোহাইডেট থেকে পাই।
এটি মস্তিষ্কের কোষগুলোকে সচল রাখতে এবং মনোযোগ স্মৃতি ও চিন্তাশক্তি বজায়
রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মস্তিষ্কের জ্বালানি গ্লুকোজ বা
কার্বোহাইড্রেট থেকে উৎপন্ন।
প্রশ্নঃ মস্তিষ্কের জন্য দৈনিক কতটুকু কার্বোহাইড্রেট প্রয়োজন?
উত্তরঃ মস্তিষ্ক সহ শরীরের সঠিক কাজের জন্য একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের
প্রতিদিন 130 গ্রাম কার্বোহাইড্রেট প্রয়োজন।
প্রশ্নঃ মস্তিষ্কের জন্য প্রতিদিন কত শর্করার প্রয়োজন হয়?
উত্তরঃ মস্তিষ্ক সঠিকভাবে কাজ করতে প্রতিদিন প্রায়ই ১২০ গ্রাম গ্লুকোজ
(শর্করা) প্রয়োজন হয়। যা প্রায় 480 ক্যালোরি।
মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার উপায় সম্পর্কে আমার নিজস্ব অভিমত
আজকের আর্টিকেলে মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার উপায়, মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার ইসলামিক
উপায় সম্পর্কে আলোচনা শুরু করে, মস্তিষ্ক ভালো রাখার খাবার, মাথা ঠান্ডা রাখার
ব্যায়াম, মাথা ঠান্ডা রাখার তেলের নাম, মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির উপায়,
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির খাবার, মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির
ব্যায়াম সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেবার চেষ্টা করেছি।
মানুষের যেকোন কাজ অত্যন্ত ভালোভাবে করার জন্য মস্তিষ্ককে ঠান্ডা রাখা খুবই
জরুরী। কেননা মানুষের সকল কাজ ব্রেনের মাধ্যমে সংঘটিত হয়। আর এই জন্য আপনি
স্রষ্টাকে স্মরণ করতে পারেন। স্রষ্টাকে স্মরণ করার মাধ্যমে আমাদের মস্তিষ্ক
অনেক বেশি শীতল হবে। স্রষ্টাকে স্মরণ করার মাধ্যমে আমাদের ইতিবাচক মনোভাব
জাগ্রত হয়, এবং আমরা প্রশান্তি অনুভব করি।
মস্তিষ্ক ঠান্ডা রাখার উপায়, মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়ানোর উপায়, মস্তিষ্ক
ভালো রাখার খাবার নিয়ে ডাক্তাররা বিভিন্ন ভিটামিন খাবার পরামর্শ দেন। তবে আসল
বিষয় হচ্ছে আপনি যা কিছুই করেন না কেন আপনার মস্তিষ্ককে শান্ত করা ব্রেনকে
বাড়িয়ে দেবার ক্ষমতা রয়েছে সৃষ্টিকর্তা একমাত্র মহান আল্লাহ তায়ালার। তাই
আপনি বেশি বেশি দোয়া করতে পারেন। ইসলামিক উপায় গুলো মেনে চলতে পারেন।
সৃষ্টিকর্তার কাছে চাইতে পারেন পাশাপাশি উপরিউক্ত টিপস গুলো ফলো করতে উপকারিতা
পাবেন।
মাল্টিম্যাক্স আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।
comment url