অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কোর্স-৩ মাসেই ঘরে বসে ডলার আয়ের সুযোগ
ঘরে বসে আয় করার স্বপ্ন পূরণ করতে চান? অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কোর্স সমূহ শেখায়
প্রয়োজনীয় স্কিল, বাস্তব প্রজেক্ট অভিজ্ঞতা এবং আন্তর্জাতিক মার্কেটে কাজ করার
সুযোগ। এটি নতুনদের জন্য সহজভাবে শেখার পরিবেশ দেয় এবং ধাপে ধাপে দক্ষতা অর্জনের
সুযোগ তৈরি করে। এখনই শুরু করে দিন, আপনার দক্ষতাকে দুনিয়ার সামনে তুলে ধরুন এবং
ঘরে বসেই ক্যারিয়ার গড়ুন।
এছাড়াও সরকারি ফ্রিল্যান্সিং কোর্স ২০২৫ নিয়ে ঘরে বসেই আয় করার সুযোগ হাতছাড়া
করবেন না! এই কোর্সে বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ, দৈনিক ভাতা এবং খাবারের সুবিধা সহ
আন্তর্জাতিক মার্কেটে কাজ করার দক্ষতা শেখানো হয়। যা আপনাকে আত্মনির্ভরতার দিকে
নিয়ে যাবে। এখনই আবেদন করুন, আপনার স্কিল দিয়ে ক্যারিয়ার গড়ুন এবং
স্বাধীনভাবে আয় শুরু করুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কোর্স কিভাবে শুরু করব/ সরকারি ফ্রিল্যান্সিং কোর্স ২০২৫
- অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কোর্স কিভাবে শুরু করব
- অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কোর্স সমূহ-কি কি কাজ করা যায়
- অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কোর্স করার সহজ উপায়
- সরকারি ফ্রিল্যান্সিং কোর্স ২০২৫
- সরকারি ফ্রিল্যান্সিং কোর্স করার উপায় কি
-
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে বিনামূল্যে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ নিয়ে আয়ের
সুযোগ
- অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কোর্স সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন উত্তর
- অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কোর্স সম্পর্কে আমার নিজস্ব অভিমত
অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কোর্স কিভাবে শুরু করব: সম্পূর্ণ গাইড
অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কোর্স সম্পর্কে জানেন কি? আজকের ডিজিটাল যুগে ফ্রিল্যান্সিং
শেখা আর কোনো কঠিন কাজ নয়। আপনি ঘরে বসেই মোবাইল বা কম্পিউটারের মাধ্যমে
ফ্রিল্যান্সিং কোর্স করতে পারেন এবং দক্ষতা অর্জন করে আয় শুরু করতে পারেন। বিশেষ
করে নতুনদের জন্য এই ফ্রিল্যান্সিং কোর্স হচ্ছে সবচেয়ে সুবিধাজনক এবং ব্যয়বহুল
নয় এমন একটি পথ।
অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কোর্স করার প্রথম ধাপ হলো নিজের আগ্রহ এবং দক্ষতা চিহ্নিত
করা। ফ্রিল্যান্সিং অনেক সেক্টরে বিভক্ত—যেমন কন্টেন্ট রাইটিং, গ্রাফিক ডিজাইন,
ভিডিও এডিটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ট্রান্সলেশন
ইত্যাদি। আপনার আগ্রহ যদি লেখা হয়, তাহলে কন্টেন্ট রাইটিং বা ব্লগিং শেখা শুরু
করতে পারেন।
ডিজাইন পছন্দ করলে Canva, Adobe Express, বা Figma অনলাইনে শিখতে পারেন। ভিডিও
এডিটিংয়ে আগ্রহ থাকলে Kinemaster বা CapCut এর অনলাইন টিউটোরিয়াল সাহায্য করবে।
অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কোর্সের জন্য সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্ম হলো ইউটিউব। ইউটিউবে
আপনি ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য:
- প্রোফাইল তৈরি এবং সেটআপ কিভাবে করবেন
- Fiverr, Upwork, Freelancer-এ কাজ খুঁজবেন
- ক্লায়েন্ট ম্যানেজমেন্ট কিভাবে করবেন
- ছোট প্রকল্প সম্পন্ন করে রিভিউ ও রেটিং পাবেন
সবকিছু
ফ্রিতে ভিডিও আকারে
শিখতে পারবেন। উদাহরণস্বরূপ, একজন শিক্ষার্থী ইউটিউব থেকে কন্টেন্ট রাইটিং শিখে
Fiverr-এ কাজ শুরু করেছিলেন। মাত্র তিন মাসের মধ্যে তার আয় $150-এর বেশি হয়েছে।
এটি দেখায় যে অনলাইন শেখার মাধ্যমে নতুনরাও দ্রুত দক্ষতা অর্জন করতে পারে।
অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কোর্সের সুবিধাঃ
- স্বাচ্ছন্দ্য এবং নমনীয়তা: আপনি যখন ইচ্ছা তখন শিখতে পারবেন।
- কম খরচে শেখা: প্রায় সবকিছু ফ্রিতে বা কম খরচে পাওয়া যায়।
- বিভিন্ন রিসোর্স: Udemy, Coursera, Skillshare, LinkedIn Learning এর মতো প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সিং কোর্স উপলব্ধ।
নতুনদের জন্য টিপস:
- প্রথমে ফ্রি রিসোর্স ব্যবহার করুন। ইউটিউব, ব্লগ পোস্ট, এবং ফ্রিল্যান্সার কমিউনিটি থেকে শেখা শুরু করুন।
- ধীরে ধীরে ছোট প্রকল্প হাতে নিন। উদাহরণস্বরূপ, ৫টি ছোট লোগো ডিজাইন করুন, ১–২টি ব্লগ পোস্ট লিখুন, বা সোশ্যাল মিডিয়ার ছোট প্রোমোশন তৈরি করুন।
- প্রতিদিন কমপক্ষে ১–২ ঘণ্টা শেখার জন্য সময় দিন। ধৈর্যই এখানে সবচেয়ে বড় চাবিকাঠি।
একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো প্রকল্পভিত্তিক শেখা। শুধু ভিডিও দেখা বা থিওরি পড়া
যথেষ্ট নয়। নতুনরা যদি অনলাইনে শেখার সময় প্রকল্পে কাজ করে, তা দ্রুত দক্ষতা
বৃদ্ধি করে। যেমন, ফ্রিল্যান্সাররা প্রথম কাজ শুরু করার সময় ছোট ছোট ক্লায়েন্ট
প্রকল্প নেয় এবং ধীরে ধীরে বড় প্রকল্পে কাজ করতে পারে। অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং
কোর্স করার সময় কমিউনিটিতে অংশগ্রহণও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ফেসবুক গ্রুপ, Reddit ফোরাম, Quora কমিউনিটি নতুনদের জন্য সহায়ক। এখানে তারা
প্রশ্ন করতে পারে, সমস্যা সমাধান পেতে পারে, এবং বাস্তব ফ্রিল্যান্সারদের টিপস
সংগ্রহ করতে পারে। পরিসংখ্যান দেখায়, ২০২৫ সালে বাংলাদেশের ডিজিটাল মার্কেটিং
এবং অনলাইন ফ্রিল্যান্সিংয়ে নতুন প্রবেশকারীর সংখ্যা ৩০% বাড়ার সম্ভাবনা
রয়েছে। অনলাইন শেখা ও দক্ষতা অর্জন করে নতুনরা বৈদেশিক মুদ্রায় আয় শুরু করতে
পারবে।
অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কোর্স সমূহ ও কী কী কাজ করা যায়
অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কোর্স সমূহ ও কী কী কাজ করা যায় জানেন কি? বর্তমান ডিজিটাল
যুগে অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং একটি জনপ্রিয় ক্যারিয়ার অপশন হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু
উন্নত দেশ নয়, বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষ ঘরে বসেই ফ্রিল্যান্সিং
কোর্স শিখে আয় করছেন। সঠিকভাবে শিখে নিয়মিত প্র্যাকটিস করলে আপনিও নিজের দক্ষতা
কাজে লাগিয়ে আয় করতে পারবেন।
এখানে আমরা আলোচনা করবো অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কোর্স সমূহ, কী কী কাজ করা যায়,
এবং কীভাবে শুরু করবেন তার ধাপে ধাপে ধারণা। এছাড়াও আমরা জানবো সরকারি
ফ্রিল্যান্সিং কোর্স ২০২৫ সম্পর্কে তাই সাথেই থাকুন।
কেন ফ্রিল্যান্সিং শিখবেন?
- ঘরে বসে আয়ের সুযোগ
- আন্তর্জাতিক মার্কেটপ্লেসে কাজ করার সুবিধা
- সময়ের স্বাধীনতা – যখন খুশি কাজ করা
- দক্ষতা বাড়িয়ে একাধিক আয়ের উৎস তৈরি
একটি গবেষণা অনুযায়ী, ২০২৪ সালে বিশ্বব্যাপী ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটে আয় প্রায়
৫৫০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়েছে, যেখানে বাংলাদেশের তরুণরাও উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান
রেখেছেন।
জনপ্রিয় অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কোর্স সমূহঃ নিচে কিছু জনপ্রিয় কোর্সের
তালিকা দেয়া হলো যেগুলো শিখে সহজেই কাজ শুরু করা যায়-
১. গ্রাফিক ডিজাইনঃ গ্রাফিক ডিজাইন ফ্রিল্যান্সিং জগতে অন্যতম জনপ্রিয়
স্কিল। এই কোর্সে শিখবেন:
- লোগো ডিজাইন
- বিজনেস কার্ড ডিজাইন
- ব্যানার, পোস্টার ও সোশ্যাল মিডিয়া ক্রিয়েটিভ তৈরি
- উদাহরণ: Fiverr বা Upwork-এ হাজার হাজার ক্লায়েন্ট নিয়মিত লোগো ডিজাইনের জন্য কাজ পোস্ট করে।
২. ওয়েব ডেভেলপমেন্টঃ যারা টেকনিক্যাল কাজ পছন্দ করেন তাদের জন্য ওয়েব
ডেভেলপমেন্ট সেরা অপশন।
- ফ্রন্ট-এন্ড (HTML, CSS, JavaScript)
- ব্যাক-এন্ড (PHP, Python, Node.js)
- ওয়ার্ডপ্রেস কাস্টমাইজেশন
- পরিসংখ্যানঃ প্রতি মাসে প্রায় ৩ কোটি নতুন ওয়েবসাইট তৈরি হয়, যা ওয়েব ডেভেলপারের চাহিদা বাড়াচ্ছে।
৩. ডিজিটাল মার্কেটিংঃ ডিজিটাল মার্কেটিং শেখা মানে অনলাইনে ব্যবসার
প্রচারের কৌশল আয়ত্ত করা।
- সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং
- SEO (Search Engine Optimization)
- ইমেইল মার্কেটিং
- পেইড অ্যাড ক্যাম্পেইন
- উদাহরণ: ছোট-বড় ব্যবসা প্রতিনিয়ত তাদের প্রোডাক্ট বা সার্ভিস প্রচারের জন্য ডিজিটাল মার্কেটার খুঁজছে।
৪. ভিডিও এডিটিং ও অ্যানিমেশনঃ ইউটিউব, ফেসবুক বা ইনস্টাগ্রাম কনটেন্ট
ক্রিয়েটরদের ভিডিও এডিটরের প্রয়োজন হয় সবসময়।
- বেসিক ভিডিও এডিটিং
- মোশন গ্রাফিক্স
- 2D/3D অ্যানিমেশন
- আয়ের সম্ভাবনা: একজন ভালো ভিডিও এডিটর মাসে সহজেই ৫০০ থেকে ২০০০ ডলার আয় করতে পারেন।
৫. কনটেন্ট রাইটিং ও কপিরাইটিংঃ যারা লেখালেখি পছন্দ করেন তারা কনটেন্ট
রাইটিং শিখে আয় করতে পারেন।
- ব্লগ পোস্ট লেখা
- প্রোডাক্ট ডেসক্রিপশন
- সোশ্যাল মিডিয়া কনটেন্ট
- SEO ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল
- উদাহরণ: অনেক ওয়েবসাইট নিয়মিত মানসম্মত কনটেন্ট রাইটার খুঁজে থাকে Google র্যাঙ্কিং উন্নত করার জন্য।
৬. ডেটা এন্ট্রি ও ভার্চুয়াল অ্যাসিস্ট্যান্সঃ যাদের টেকনিক্যাল স্কিল
কম, তারা এই কাজগুলো দিয়ে শুরু করতে পারেন।
- ডেটা এন্ট্রি
- ওয়েব রিসার্চ
- ইমেইল ম্যানেজমেন্ট
- অনলাইন অ্যাডমিন সাপোর্ট
৭। সাইবার সিকিউরিটি (Cyber Security)ঃ ডিজিটাল দুনিয়ায় নিরাপত্তার
গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। তাই সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞদের চাহিদা সবসময়ই বেশি।
- নেটওয়ার্ক সিকিউরিটি
- এথিক্যাল হ্যাকিং
- পেনিট্রেশন টেস্টিং
- ডেটা প্রোটেকশন এবং প্রাইভেসি ম্যানেজমেন্ট
- সিকিউরিটি অডিট
কাজের ক্ষেত্রঃ
- ওয়েবসাইট বা অ্যাপ সিকিউরিটি অডিট
- সিকিউরিটি কনসালটিং
- ম্যালওয়্যার রিমুভাল
- সাইবার আক্রমণ প্রতিরোধ ব্যবস্থা
আয়ের সম্ভাবনাঃনতুনদের জন্য ছোট প্রজেক্টে ৫০ থেকে ২০০ ডলার আয় সম্ভব। অভিজ্ঞ
হলে মাসে কয়েক হাজার ডলার পর্যন্ত আয় করা যায়।
৮। UI/UX ডিজাইন (User Interface & User Experience Design)ঃ যেকোনো
ওয়েবসাইট বা অ্যাপ সফল করার মূল রহস্য হলো এর UI/UX ডিজাইন। তাই এই স্কিলটি
মার্কেটে সবসময়ই চাহিদাসম্পন্ন।
- Adobe XD, Figma, বা Sketch ব্যবহার
- ওয়্যারফ্রেম ও প্রোটোটাইপ তৈরি
- কালার থিওরি ও টাইপোগ্রাফি
- ইউজার বিহেভিয়ার অ্যানালাইসিস
কাজের ক্ষেত্র:
- ওয়েবসাইট ডিজাইন
- মোবাইল অ্যাপ ডিজাইন
- ড্যাশবোর্ড বা সফটওয়্যার ইন্টারফেস
- রিব্র্যান্ডিং ও প্রোডাক্ট ডিজাইন
আয়ের সম্ভাবনাঃ একটি UI ডিজাইন প্রজেক্টে সহজেই ৩০০ থেকে ১০০০ ডলার পর্যন্ত আয়
করা সম্ভব।
৯। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও মেশিন লার্নিং (AI & ML)ঃ AI এবং
মেশিন লার্নিং এখন শুধু ট্রেন্ড নয়, ভবিষ্যতের ক্যারিয়ারের মূল হাতিয়ার। যারা
ডেটা, প্রোগ্রামিং এবং লজিক্যাল চিন্তাভাবনা পছন্দ করেন তাদের জন্য এই স্কিল
সেরা। কী শিখবেন:
- পাইথন প্রোগ্রামিং
- ডেটা অ্যানালাইসিস ও ডেটা ভিজুয়ালাইজেশন
- মেশিন লার্নিং অ্যালগরিদম
- ডিপ লার্নিং (TensorFlow, PyTorch)
- AI মডেল ডেপ্লয়মেন্ট
কাজের ক্ষেত্র:
- AI বেসড সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট
- ডেটা অ্যানালিস্ট বা মডেল ট্রেইনার
- চ্যাটবট বা অটোমেশন সলিউশন
- প্রেডিক্টিভ অ্যানালাইসিস প্রজেক্ট
আয়ের সম্ভাবনাঃ AI/ML সম্পর্কিত প্রজেক্টগুলো সাধারণত হাই-পেইড হয়। একজন দক্ষ
ডেভেলপার সহজেই মাসে ১০০০ থেকে ৫০০০ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারেন।
১০. অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট (App Developmentঃ স্মার্টফোন ব্যবহারের বৃদ্ধির
কারণে অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট এখন ফ্রিল্যান্সিংয়ের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধনশীল
স্কিলগুলোর একটি। কী শিখবেন:
- মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট (Android Studio, Java, Kotlin)
- iOS ডেভেলপমেন্ট (Swift, Xcode)
- ক্রস-প্ল্যাটফর্ম ফ্রেমওয়ার্ক (Flutter, React Native)
- বেসিক UI/UX ডিজাইন
কাজের ক্ষেত্র:
- ব্যবসায়িক অ্যাপ তৈরি
- গেম ডেভেলপমেন্ট
- ই-কমার্স অ্যাপ
- সার্ভিস-বেসড অ্যাপ
আয়ের সম্ভাবনাঃ একটি ছোট অ্যাপ ডেভেলপ করার জন্য ২০০ থেকে ৫০০ ডলার পর্যন্ত
পেমেন্ট পাওয়া যায়, আর জটিল প্রজেক্টে কয়েক হাজার ডলারও আয় করা সম্ভব।
অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কোর্স সমূহ শুধু একটি স্কিল শেখায় না, এটি আয়ের পাশাপাশি
ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগও দেয়। এছাড়াও সরকারি ফ্রিল্যান্সিং কোর্স ২০২৫-এ রয়েছে
ব্যাপক সুযোগ সুবিধা। সঠিক পরিকল্পনা ও ধৈর্য ধরে শিখতে পারলে আপনিও আন্তর্জাতিক
বাজারে একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হতে পারবেন। আপনি কোন স্কিল শিখতে চান বলে মনে
করছেন? আমি চাইলে সেই স্কিলের জন্য শুরু করার ধাপগুলো আলাদা করে সাজিয়ে দিতে
পারি।
অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কোর্স করার উপায়
১. ইউটিউব থেকে শেখা
- ইউটিউব হচ্ছে নতুনদের জন্য সবচেয়ে সহজ এবং ফ্রি উপায় অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং শেখার। এখানে আপনি বিভিন্ন টিউটোরিয়াল ভিডিও পাবেন যা ধাপে ধাপে শেখায় কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং প্রোফাইল তৈরি করতে হয়, ক্লায়েন্ট খুঁজতে হয় এবং প্রোজেক্ট সম্পন্ন করতে হয়। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি কন্টেন্ট রাইটিং শিখতে চান, ইউটিউবে অনেক বাংলাভাষী চ্যানেল আছে যারা নতুনদের জন্য সহজ টিপস দেয়। ভিডিও দেখে আপনি সরাসরি অনুশীলন করতে পারবেন এবং বাস্তব জীবনের উদাহরণ অনুযায়ী কাজ শেখা সম্ভব হবে।
২. ফ্রিল্যান্সিং শিক্ষার অনলাইন প্ল্যাটফর্ম
- Coursera, Udemy, Skillshare, LinkedIn Learning ইত্যাদি প্ল্যাটফর্মে ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য বিস্তারিত কোর্স পাওয়া যায়। এখানে কোর্সগুলো সাধারণত পয়েন্ট ভিত্তিক নয়, প্রকল্পভিত্তিক এবং বাস্তব উদাহরণের মাধ্যমে শেখানো হয়। যেমন, গ্রাফিক ডিজাইন কোর্সে বিভিন্ন লোগো, পোস্টার ও সোশ্যাল মিডিয়া কন্টেন্ট তৈরি করার প্রকল্প থাকে। এই ধরনের কোর্সে অংশ নিয়ে আপনি বাস্তব দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন।
৩. অনলাইন ব্লগ ও আর্টিকেল থেকে শেখা
- অনলাইন ব্লগ ও শিক্ষামূলক ওয়েবসাইট থেকে ফ্রিল্যান্সিং শেখা একটি কম খরচে এবং কার্যকর উপায়। বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সার তাদের অভিজ্ঞতা, টিপস এবং কেস স্টাডি শেয়ার করে, যা নতুনদের জন্য দারুণ সহায়ক। উদাহরণস্বরূপ, একজন ব্লগার তার Fiverr অভিজ্ঞতা বিস্তারিত লিখে দেখায় কিভাবে ছোট প্রজেক্ট থেকে বড় প্রজেক্টে রূপান্তর করা যায়।
৪. কমিউনিটি ও ফোরাম
- ফেসবুক গ্রুপ, Reddit, Quora ইত্যাদি ফোরামে অংশগ্রহণ করে আপনি বাস্তব ফ্রিল্যান্সারদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। এখানে আপনি নতুন প্রকল্পের জন্য টিপস, কাজের চ্যালেঞ্জ এবং মার্কেটিং কৌশল জানতে পারবেন। এছাড়াও, কমিউনিটি থেকে সহায়তা পেয়ে নতুনদের জন্য শেখার প্রক্রিয়া সহজ হয়।
৫. প্রোজেক্টভিত্তিক শেখা
- অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কোর্স করার সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো বাস্তব প্রকল্পে কাজ করা। শুধু ভিডিও বা টেক্সট পড়লেই হবে না; আপনি প্রকৃত কাজের মাধ্যমে শেখার চেষ্টা করুন। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনি সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং শিখছেন, নিজের বা বন্ধুদের পেজে ছোট ক্যাম্পেইন পরিচালনা করুন। এটি আপনার দক্ষতা বাড়াবে এবং ক্লায়েন্টের জন্য প্রস্তুত করবে।
৬. মেন্টর বা অনলাইন গাইডের সাহায্য নেওয়া
- অনলাইনে এমন অনেক ফ্রিল্যান্সার আছেন যারা নতুনদের মেন্টর হিসেবে কাজ করেন। তারা শিক্ষার্থীদের প্রকল্প দেখে ফিডব্যাক দেয়, এবং শেখার প্রক্রিয়ায় সাহায্য করে। এটি নতুনদের জন্য অত্যন্ত সহায়ক, কারণ আপনি সরাসরি অভিজ্ঞ ফ্রিল্যান্সারের কাছ থেকে বাস্তব টিপস পাবেন।
৭. নিয়মিত অনুশীলন
- ফ্রিল্যান্সিং শেখার সবচেয়ে বড় চাবিকাঠি হলো নিয়মিত অনুশীলন। প্রতিদিন কিছু সময় রেখে নতুন প্রজেক্ট বা স্কিল অনুশীলন করতে হবে। উদাহরণস্বরূপ, যদি আপনি কন্টেন্ট রাইটিং শিখছেন, প্রতিদিন একটি ছোট ব্লগ পোস্ট লিখুন। ভিডিও এডিটিং শিখছেন? প্রতিদিন একটি ছোট ভিডিও সম্পাদনা করুন। নিয়মিত অনুশীলন দক্ষতা বাড়ায় এবং আত্মবিশ্বাসও বৃদ্ধি করে।
৮. ফ্রি টুল ও সফটওয়্যার ব্যবহার করা
- অনলাইনে শেখার সময় আপনি বিভিন্ন ফ্রি টুল ব্যবহার করতে পারেন। যেমন, গ্রাফিক ডিজাইনের জন্য Canva, ভিডিও এডিটিংয়ের জন্য Kinemaster বা CapCut, কন্টেন্ট লেখার জন্য Google Docs বা Grammarly। এগুলো ব্যবহার করে আপনি নতুন স্কিল প্র্যাকটিস করতে পারবেন এবং প্রকৃত ফ্রিল্যান্সিং কাজে ব্যবহারযোগ্য দক্ষতা অর্জন করবেন।
অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কোর্স সমূহ নতুনদের জন্য সবচেয়ে সুবিধাজনক ও কার্যকর
উপায়। ইউটিউব, অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, ব্লগ, কমিউনিটি ও প্রকল্পভিত্তিক শেখার
মাধ্যমে আপনি দ্রুত দক্ষতা অর্জন করতে পারেন। নিয়মিত অনুশীলন, প্রকল্পভিত্তিক
শেখা এবং ফ্রি টুল ব্যবহার করে নতুনরাও সফল ফ্রিল্যান্সার হয়ে উঠতে পারে।
সরকারি ফ্রিল্যান্সিং কোর্স ২০২৫: বিস্তারিত গাইড
সরকারি ফ্রিল্যান্সিং কোর্স ২০২৫. অনেকেই জানিনা সরকারিভাবেও ফ্রিল্যান্সিং কোর্স
শেখা যায়। বর্তমান সময়ে ফ্রিল্যান্সিং বাংলাদেশে খুবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
তরুণরা ঘরে বসে বৈদেশিক মুদ্রায় আয় করতে আগ্রহী। তাই সরকারি ফ্রিল্যান্সিং
কোর্স ২০২৫ অনেকের জন্য একটি সুযোগ। এই কোর্সগুলো সাধারণত সঠিক দিকনির্দেশনা,
দক্ষতা উন্নয়ন এবং বাস্তব ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটের সাথে সংযোগ দেওয়ার জন্য
ডিজাইন করা হয়েছে।
সরকারি
ফ্রিল্যান্সিং কোর্সের
সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এটি কম খরচে, বিশ্বস্ত এবং মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদান করে,
যা নতুনদের জন্য আদর্শ। এছাড়াও, কোর্স শেষে অনেক সময় প্রমোটশনাল সার্টিফিকেট
দেওয়া হয় যা ক্লায়েন্টদের কাছে আপনার বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ায়।
সরকারি ফ্রিল্যান্সিং কোর্সের প্রয়োজনীয়তাঃ-
- বর্তমান বাংলাদেশে তরুণ প্রজন্মের জন্য কর্মসংস্থান একটি বড় চ্যালেঞ্জ। প্রচলিত চাকরির সুযোগ সীমিত, আর হাজার হাজার নতুন গ্র্যাজুয়েট প্রতি বছর চাকরির বাজারে প্রবেশ করে। এই পরিস্থিতিতে ফ্রিল্যান্সিং একটি স্বাধীন ও লাভজনক পেশার বিকল্প হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।
সরকারি ফ্রিল্যান্সিং কোর্সের মূল উদ্দেশ্য হলোঃ
- তরুণদের ডিজিটাল দক্ষতা উন্নয়ন করা।
- ঘরে বসে বৈদেশিক মুদ্রায় আয় করার উপায় শেখানো।
- সরকারি কর্মসংস্থান না পেলে, স্বনির্ভর আয় তৈরি করার সুযোগ দেওয়া।
- দেশের ডিজিটাল অর্থনীতি বাড়ানো।
- ফ্রিল্যান্সিং শেখার মাধ্যমে একজন তরুণ তার নিজস্ব সময়মতো কাজ করতে পারে, লাইফস্টাইল এবং আর্থিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে পারে।
সরকারি ফ্রিল্যান্সিং কোর্স করার উপায়
১. অনলাইন রেজিস্ট্রেশনঃ সরকারি ফ্রিল্যান্সিং কোর্স ২০২৫ অংশ
নেওয়ার সবচেয়ে সহজ উপায় হলো অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করা। বিভিন্ন সরকারি
প্রতিষ্ঠান যেমন ICT বিভাগ, BMET এবং Skills Development Authority তাদের
অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে ফর্ম রাখে। রেজিস্ট্রেশন করার সময় সাধারণত নিচের তথ্য
প্রয়োজন হয়:
- পূর্ণ নাম
- জন্ম তারিখ
- যোগাযোগের নম্বর
- শিক্ষাগত যোগ্যতা
- আগ্রহের ফ্রিল্যান্সিং শাখা
- অনলাইন রেজিস্ট্রেশন শেষে প্রায়ই নির্দিষ্ট সময়ে কোর্সের লিঙ্ক বা অ্যাক্সেস পাসওয়ার্ড ইমেইল বা SMS এর মাধ্যমে পাঠানো হয়।
২. কোর্সের ধরন ও বিষয়বস্তুঃ- সরকারি ফ্রিল্যান্সিং কোর্সে বিভিন্ন শাখার
প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। যেমন:
- কন্টেন্ট রাইটিং ও ব্লগিং: ব্লগ পোস্ট, আর্টিকেল ও SEO কন্টেন্ট লেখা শেখানো হয়।
- গ্রাফিক ডিজাইন: Canva, Adobe Illustrator বা Photoshop ব্যবহার করে লোগো, পোস্টার, সোশ্যাল মিডিয়া কন্টেন্ট তৈরির প্রশিক্ষণ।
- ডিজিটাল মার্কেটিং: সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং ও বিজ্ঞাপন প্রচারের কৌশল।
- ওয়েব ডেভেলপমেন্ট: HTML, CSS, WordPress, ওয়েবসাইট তৈরি ও হোস্টিং সম্পর্কিত শিক্ষা।
- ভিডিও এডিটিং ও অ্যানিমেশন: Kinemaster, CapCut, Premiere Pro ব্যবহার শেখানো হয়।
- কোর্সগুলো সাধারণত ৩-৬ মাসের মধ্যে সম্পন্ন হয় এবং সপ্তাহে ২-৩ দিন অনলাইনে ক্লাস নেওয়া যায়।
৩. কোর্স ফি ও ভর্তির খরচঃ সরকারি ফ্রিল্যান্সিং কোর্সের ফি অনেকটাই কম।
সাধারণত:
- ফ্রি কোর্স: ICT বিভাগ বা Skills Development Authority কিছু কোর্স ফ্রিতে প্রদান করে।
- কম খরচে কোর্স: ৫০০ থেকে ৫,০০০ টাকা মধ্যে নির্ধারিত। এটি সাধারন শিক্ষার্থী বা গৃহবধূদের জন্য বিশেষ সুবিধাজনক।
- ফ্রি বা কম খরচে কোর্স নেওয়ার সময় নিশ্চিত করুন যে কোর্সটি সর্বশেষ ২০২৫-এর আপডেটেড কারিকুলাম অনুযায়ী হচ্ছে।
৪. অনুশীলন ও বাস্তব অভিজ্ঞতাঃ শুধু ভিডিও বা লেকচার দেখলেই হবে না;
সরকারি ফ্রিল্যান্সিং কোর্সে সাধারণত প্রকল্পভিত্তিক প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।
উদাহরণস্বরূপ:
- কন্টেন্ট রাইটিং শিখলে ছোট ব্লগ পোস্ট লিখে ফিডব্যাক পাবেন।
- গ্রাফিক ডিজাইন শিখলে রিয়েল প্রোজেক্টে লোগো বা সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট তৈরি করা হয়।
- এই ধরনের প্রকল্প আপনাকে বাস্তব ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটের জন্য প্রস্তুত করে।
৫. সার্টিফিকেট ও প্রফেশনাল ক্রেডিটঃ সরকারি কোর্স সম্পন্ন হলে অফিসিয়াল
সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। এটি আপনার প্রোফাইলকে আরও প্রফেশনাল দেখায়।
উদাহরণস্বরূপ, Fiverr বা Upwork-এ আপনার প্রোফাইল আপডেট করার সময় সরকারি
সার্টিফিকেট দেখালে ক্লায়েন্টদের আস্থা বৃদ্ধি পায়।
৬. অতিরিক্ত টিপস
- কোর্স শুরু করার আগে আপনার আগ্রহ এবং দক্ষতার ক্ষেত্র নির্ধারণ করুন।
- সরকারি ফ্রিল্যান্সিং কোর্সে অংশ নেওয়ার সময় নিয়মিত অনুশীলন ও প্র্যাকটিস করুন।
- কোর্স শেষে শেখা স্কিল দিয়ে ছোট প্রোজেক্ট শুরু করুন, ধীরে ধীরে বড় কাজের দিকে এগোন।
- সোশ্যাল মিডিয়ায় অংশগ্রহণ করুন এবং কমিউনিটি থেকে ফিডব্যাক নিন, যাতে বাস্তব মার্কেটের অভিজ্ঞতা অর্জন হয়।
সরকারি ফ্রিল্যান্সিং কোর্স ২০২৫ হচ্ছে নতুনদের জন্য এক অসাধারণ সুযোগ। ফ্রি বা
কম খরচে কোর্স করে, প্রকল্পভিত্তিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে, নিয়মিত অনুশীলন ও
কমিউনিটি থেকে ফিডব্যাক নিয়ে নতুনরাও দক্ষ ফ্রিল্যান্সার হয়ে উঠতে পারে। কোর্স
শেষে সরকার প্রদত্ত সার্টিফিকেট আপনাকে নির্ভরযোগ্য এবং প্রফেশনাল প্রোফাইল গড়তে
সাহায্য করবে, যা আয় বাড়ানোর পথে এক গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার।
সরকারি ফ্রিল্যান্সিং কোর্স শুধু একটি শিক্ষা প্রোগ্রাম নয়। এটি ডিজিটাল দক্ষতা
বৃদ্ধি, বেকারত্ব কমানো, বৈদেশিক মুদ্রা আয়, উদ্যোক্তা মানসিকতা উন্নয়ন এবং
সমাজে সমতার সুযোগ তৈরি করার একটি প্রয়াস। নতুনরা যদি এই কোর্সের সুযোগ গ্রহণ
করে নিয়মিত অনুশীলন ও প্রকল্পভিত্তিক কাজ করে, তবে তারা নিজেকে স্বনির্ভর
ফ্রিল্যান্সার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারবে।
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর ফ্রিল্যান্সিং কোর্স ২০২৫
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরে বিনামূল্যে ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ নিয়ে আয়ের সুযোগ
নিশ্চিত করতে চান?
- কী এই কোর্স?
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ কোর্স হলো একটি সরকারি উদ্যোগ যা
বিনা ফি (ফ্রি) এবং রোজগারের সুযোগ নিশ্চিত করতে তৈরি। সম্পূর্ণ ৩ মাস ব্যাপী,
৬০০ ঘণ্টা মোট ক্লাসপাঠ; যেখানে সম্মানের সঙ্গে প্রতিদিন ২০০ টাকা ভাতা এবং খাবার
দেওয়া হয়। এটি মূলত “শিক্ষিত কর্মপ্রত্যাশী যুবদের ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণের
মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি” প্রকল্পের আওতায় পরিচালিত হয়। এখানে ০ টাকা ফি,
ক্যাসুয়াল অথচ মানসম্পন্ন কোর্স, এটি সত্যিই একটি সুখবর।
- সরকারি উদ্যোগের পেছনের কাহিনী
এই কোর্সটি পরিচালিত হচ্ছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের অধীন যুব উন্নয়ন
অধিদপ্তর কর্তৃক, যার লক্ষ্য হলো শিক্ষিত কর্মপ্রত্যাশী যুবদের দক্ষতা গড়ে তুলে,
ফ্রিল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে তাদের স্বাবলম্বী করা। এটি এমন একটি প্রকল্প যেখানে
ফ্রি ট্রেনিং, অর্থ, ভাতা—সবকিছুই সরকারি সহযোগিতায় প্রদান করা হয়।
কোর্সের সময়সীমা ও সময়সূচি কী?
- মেয়াদ: ১ July ২০২৫ — ৩০ September ২০২৫ (মোট ৩ মাস)
- সপ্তাহে ক্লাস: ৬ দিন (সোম থেকে শনিবার)
- প্রতিদিনের ক্লাস: ৮ ঘণ্টা করে (মোট ৭৫টি সেশন)
- মোট ৬০০ ঘণ্টার অফলাইন ক্লাস, যা আপনাকে পুরো মনযোগ দিয়ে শেখার সুযোগ করে দেয়।
কে আবেদন করতে পারবে?
- যারা এইচএসসি বা সমমান পাস, এবং বয়স ১৮–৩৫ বছরের মধ্যেই—তারা আবেদন করার জন্য নির্ভরযোগ্য। আবেদন করতে হবে অনলাইনে।
- বয়স: ১৮–৩৫ বছর
- শিক্ষাগত যোগ্যতা: এইচএসসি বা সমমান
- আবেদনের মাধ্যম: অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণ
এই সুযোগ খুলে দেয় প্রতিটি শিক্ষিত, কর্মপ্রত্যাশী যুব–যুবতীর জন্য, যারা
বাড়িতে বসে দক্ষতা গড়ে তুলতে চান।
সরকারি ফ্রিল্যান্সিং কোর্স ২০২৫ সুবিধাসমূহঃ- যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর এ
কোর্সের মধ্যে একাধিক সহায়তা দিয়েছে যাতে যেকোন প্রেক্ষাপটে সফল হওয়া যায়:
- শুল্কমুক্ত (Free Training) – কোনো টাকা দিতে হবে না
- দৈনিক ভাতা: ২০০ টাকা (যাতায়াত ও খাবারের উদ্দেশ্যে)
- খাবার: সকালের নাশতা, দুপুরের খাবার, বিকেলের নাশতা
- সনদপত্র: কোর্স শেষে অফিশিয়াল সার্টিফিকেট প্রদান করা হবে
এই গুরুত্বপূর্ণ সুবিধাগুলো নিশ্চিত করে যে প্রশিক্ষণ শুধুমাত্র শেখার জন্যই নয়,
আত্মবিশ্বাস ও প্রেরণাও জাগাতে পারে তরুণদের মধ্যে।
কোথায় এবং কীভাবে আবেদন করবেন?
- আবেদন শুরু: ২২ মে ২০২৫
- শেষ তারিখ: ১২ জুন ২০২৫ (রাত ১১:৫৯ পর্যন্ত)
- লেখিত পরীক্ষা: ১৭ জুন ২০২৫
- মৌখিক পরীক্ষা: ১৯ জুন ২০২৫
- চূড়ান্ত ফলাফল: ২৩ জুন ২০২৫ প্রকাশ করা হবে
এই ধাপে প্রতিটি পদক্ষেপ আপনাকে সঠিকভাবে গাইড করে, যাতে আপনি কোনোও ভুল না করেন
— প্রত্যেকটি তারিখ নির্ভুলভাবে উল্লেখ করা হয়েছে যাতে আপনি প্রস্তুত থাকতে
পারেন।
BD Job Circular 2024
Prothomalo
আবেদন করার জায়গা ও অঞ্চলঃ এই কোর্স বাংলাদেশের ৮টি বিভাগ ও ৪৮টি জেলা থেকে
আবেদন সুবিধা দেয়:
- ঢাকা বিভাগ: নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, নরসিংদী, মুন্সিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর
- ময়মনসিংহ বিভাগ: ময়মনসিংহ, জামালপুর, নেত্রকোনা
- চট্টগ্রাম বিভাগ: চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি, নোয়াখালী, ফেনী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
- রাজশাহী বিভাগ: চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, নাটোর, বগুড়া, জয়পুরহাট, পাবনা, সিরাজগঞ্জ
- খুলনা বিভাগ: খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, কুষ্টিয়া
- রংপুর বিভাগ: রংপুর, কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, গাইবান্ধা, নীলফামারী, দিনাজপুর, পঞ্চগড়
- বরিশাল বিভাগ: বরিশাল, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, বরগুনা
- সিলেট বিভাগ: হবিগঞ্জ, মৌলভীবাজার
এগুলি হচ্ছে দেশের প্রায় প্রতিটি কোণে ছড়িয়ে থাকা সুযোগ; কোথাও থেকে কারোই সুযোগ
থেকে বাদ পড়ার কারণ নেই।
- গতির পরিসংখ্যান ও ইমপ্যাক্টঃ
সম্প্রতি, ৫০ জন প্রশিক্ষণার্থীকে সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে টাঙ্গাইলে—যা
উল্লেখযোগ্য সরাসরি ফলাফল। এ প্রজেক্টের মাধ্যমে ডিজিটাল মার্কেটিং, গ্রাফিক্স
ডিজাইন, এবং ওয়েব ডেভেলপমেন্ট সহ বিভিন্ন স্কিল শেখানো হচ্ছে, যাতে বাচ্চাদের
বিদেশি মুদ্রায় আয় করার সুযোগ তৈরি হয়।
- পরামর্শ
বিদেশি আয়ের দুনিয়ায়
পা রাখতে চাইলে, এই ফ্রি প্রশিক্ষণ শুধু শুরু—কিন্তু মূল ভিত্তি ঠিক ঠিক এখানে
গড়ে তোলা যায়। আপনি যদি আগ্রহী, তবে:
নির্দিষ্ট তারিখগুলো মনোযোগ দিয়ে মনে রাখবেন
প্রস্তুতি নিন লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষার জন্য
পোর্টফোলিও বা নমুনা কাজ তৈরি রাখতে পারেন সম্পূরকভাবে
ক্লাস শুরু হলেই নিয়মিত অংশগ্রহণ ও প্রো-অ্যাকটিভ মনোভাব রাখুন
- সারসংক্ষেপ
যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের ফ্রিল্যান্সিং কোর্স ২০২৫ হলো:
শুল্কমুক্ত, সম্পূর্ণ ফ্রি
৩ মাস, ৬০০ ঘণ্টা ক্লাস
দৈনিক ২০০ টাকা ভাতা + খাবার
৪৮টি জেলার তরুণদের জন্য
লিখিত ও মৌখিক পর্যায়ে নির্বাচন
সফল হলে সার্টিফিকেট প্রদান
অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কোর্স সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন উত্তর
প্রশ্ন ১। কোর্স শুরু করার জন্য কি প্রয়োজনীয় ডিভাইস বা সফটওয়্যার আছে?
উত্তরঃ প্রাথমিকভাবে একটি কম্পিউটার বা ল্যাপটপ এবং ইন্টারনেট সংযোগ যথেষ্ট। কিছু
কোর্সে নির্দিষ্ট সফটওয়্যার বা অ্যাপের প্রয়োজন হতে পারে।
প্রশ্ন ২। ফ্রিল্যান্সিং কাজের জন্য ইংরেজি শেখা জরুরি কি?
উত্তর: প্রাথমিক কাজের জন্য হালকা ইংরেজি যথেষ্ট, কিন্তু আন্তর্জাতিক
ক্লায়েন্টের সাথে যোগাযোগের জন্য ভালো ইংরেজি গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন ৩। অনলাইন কোর্স কীভাবে শুরু করবেন?
উত্তরঃ অনলাইন কোর্স শুরু করার জন্য প্রথমে-
- একটি বিশ্বস্ত কোর্স বা প্ল্যাটফর্ম বেছে নিন (Udemy, Coursera, Fiverr Learn ইত্যাদি)।
- আপনার আগ্রহ অনুযায়ী স্কিল নির্বাচন করুন।
- প্রজেক্ট বা অ্যাসাইনমেন্টে নিয়মিত কাজ করুন।
- একটি পোর্টফোলিও তৈরি করুন।
- আন্তর্জাতিক মার্কেটে প্রোফাইল খুলে কাজ শুরু করুন।
প্রশ্ন ৪। কোন জেলা বা অঞ্চলের যুবরা আবেদন করতে পারবেন?
উত্তর: সরকারি কোর্সটি দেশের ৪৮টি জেলা থেকে আবেদনযোগ্য। ঢাকার জেলা, চট্টগ্রাম,
রাজশাহী, খুলনা, সিলেট, রংপুর, বরিশাল—সব বিভাগের যুবরা অংশ নিতে পারবেন।
প্রশ্ন ৫। এই কোর্সের মাধ্যমে আয়ের সম্ভাবনা কেমন?
উত্তর: কোর্স শেষে দক্ষ ফ্রিল্যান্সাররা মাসে ৫০০ থেকে ৫০০০ ডলার পর্যন্ত আয়
করতে পারেন, স্কিল এবং প্রজেক্টের ধরণের উপর নির্ভর করে।
অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কোর্স সম্পর্কে আমার নিজস্ব অভিমত
আজকের আর্টিকেলে অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কোর্স কিভাবে শুরু করব, অনলাইন
ফ্রিল্যান্সিং কোর্স সমূহ-কি কি কাজ করা যায়, অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কোর্স করার
উপায়, সরকারি ফ্রিল্যান্সিং কোর্স ২০২৫, সরকারি ফ্রিল্যান্সিং কোর্স করার উপায়
কি, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর ফ্রিল্যান্সিং কোর্স ২০২৫ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে
ধরার চেষ্টা করেছি।
আমার অভিমত অনুযায়ী অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং কোর্স হলো বর্তমান সময়ের সবচেয়ে
কার্যকর উপায় ঘরে বসে আয় করার। এটি শুধু নতুন স্কিল শেখার সুযোগ দেয় না, বরং
বাস্তব জীবনের প্রজেক্টের মাধ্যমে অভিজ্ঞতাও দেয়। আমি মনে করি যারা নিয়মিত
চেষ্টা এবং ধৈর্য্য বজায় রাখেন, তারা সহজেই আন্তর্জাতিক মার্কেটে নিজেকে
প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন। এটি নতুনদের জন্য আত্মনির্ভরতার দারুণ একটি পথ। আমি নিজে
দেখেছি, যারা এই কোর্সে অংশ নিয়েছে, তারা অল্প সময়েই আয়ের ধারায় সফল হয়েছে।
তাই আমার মতে, এটি শিক্ষার্থী ও তরুণদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং
প্রয়োজনীয় একটি উদ্যোগ।
মাল্টিম্যাক্স আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন।
comment url